শ্রেয়া চ্যাটার্জি – লক ডাউন এর জন্য দোকানপাট বন্ধ। রাস্তার কুকুর দের কি হবে! পথচলতি মানুষ আর বিস্কুট দেয় না। মাংস দোকানের লোকটা এক টুকরো মাংস ছুঁড়ে দেয় না। নর্দমার ধারে পড়ে থাকে না এঁটো ভাত। ভয় মানুষ বাইরে বের হচ্ছেন না। বড্ড কষ্টই প্রাণীগুলোর। ওরা কথা বলতে পারেনা। তাবলে খিদের জ্বালা সহ্য করা যায় কি?
এই কুকুর গুলো যদি অসহায় হয়ে আপনার বাড়ির গেটের সামনে একটু দাঁড়ায় দয়া করে তাকে লাঠি দিয়ে মেরে তাড়িয়ে দেবেন না। এই দুর্দিনে বাজারে এক টুকরো বিস্কুট হলেও তার মুখের সামনে তুলে দিন। উপরের অচেনা-অজানা মানুষটিকে দেখেই মনে হচ্ছে মানসিক ভারসাম্যহীন। কিন্তু আপনি কি করে বলবেন মানুষটি পাগল? হাতে বিস্কুটের প্যাকেট নিজে না খেয়ে কুকুরদের মধ্যে ভাগ করে দিচ্ছেন। মাথার গন্ডগোল থাকলেও মানুষটি কিন্তু দরাজ মনের, এই কথা মনে মনে আপনাকে স্বীকার করতেই হবে।
সোশ্যাল মিডিয়ার অনেক ছবি দেখা যায় যেখানে পথের কুকুরের মুখে কেউ কেরোসিন তেল ঢেলে দিচ্ছে কিংবা বিষ খাইয়ে মেরে ফেলছে কুকুরগুলিকে এবং তার ছানাদের। তারা প্রত্যেকেই মানুষ এবং বড় ঘরে তাদের বাস। দেখেছেন, মনুষ্যত্ব কখনো অর্থ দেখে, শিক্ষা দেখে আসে না। চালচুলোহীন এই মানুষটি অনেক বড় মনুষ্যত্বের অধিকারী। যা অর্থ দিয়ে শিক্ষা দিয়ে আপনি কিনতে পারবেন না। তবে দেখে শিখতে পারেন।
আমাদের যতটুকু সাধ্য আমরা যদি প্রত্যেকে আমাদের সাধ্যমত একটু একটু করে এগিয়ে যাই তাহলে হয়তো পৃথিবী একটু অন্যরকম হবে। ভাবুন তো আপনার পাড়ার কুকুরগুলো আপনাকে রাত্রিবেলা কতটা সুরক্ষিত রাখে। কুকুর হঠাৎ মাঝ রাত্রে চেঁচিয়ে উঠলে আপনি নিশ্চয়ই ভাববেন কোন অজানা লোক আপনার পাড়ায় ঢুকেছে। একটু বিস্কুট, একটু ভাত বা একটু মাংসের হাড় এইতো চায় এরা। দিয়েই দেখুন, দেখবেন পৃথিবীতে সবচেয়ে সুন্দর মানুষ আপনি হবেন। কোন রকম দামি ক্রিম না মেখেই আয়নার সামনে যখন দাঁড়াবেন, নিজের গাল দুটো চিকচিক করে উঠবে।