পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে গতবছর ভয়ানক ভাবে আঘাত করেছিল সাইক্লোন আম্ফান। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আবার হাজির নতুন একটি ঘূর্ণিঝড় যার নাম দেওয়া হয়েছে যশ। আগের ঘূর্ণিঝড়ে অর্থাৎ আমফানে বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর চাইছেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা ঘোষণা করে দিয়েছেন, “যশ ঘূর্ণিঝড় যে জেলাগুলির উপর আসতে চলেছে সেখানকার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সংস্থার সমস্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। শনিবার থেকে প্রশাসনিক স্তরে কার্যত যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। আমি নিজে কন্ট্রোল রুম থেকে তদারকি করব।”
বিভিন্ন জেলায় আগের বছর যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল তা যাতে এবছর আর না হয় তা একেবারে নিশ্চিত করতে চাইছেন মমতা। আগের বছর আমফানের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারারাত নবান্নে কন্ট্রোল রুমে কাটিয়েছিলেন। এবারে নবান্নের পাশের বিল্ডিং উপান্নে তৈরি করা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, এবারেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারারাত জেগে এই সাইক্লোনের পর্যবেক্ষণ করবেন।
মমতার ঘোষণা, “সমস্ত কর্মকর্তাকে ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যার আশ্রয় কেন্দ্রগুলির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নদীর তীরবর্তী অঞ্চল থেকে মানুষকে দ্রুত সরিয়ে আনার কাজ চলছে। ত্রাণ এবং পুনর্বাসনের কাজ দ্রুত শুরু করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্য সরকার। মৎস্যজীবীদের অবিলম্বে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন তারা দ্রুত ফিরে আসেন নিজের জায়গায়। এছাড়াও যখনই আপনারা ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বেন এবং সাহায্যের দরকার পড়বে তখন দুটি হেল্পলাইন নম্বর রইল। এই দুটি হেল্পলাইন নাম্বারে ফোন করে আপনারা নির্দ্বিধায় সাহায্য চাইতে পারবেন।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফেসবুকে একটি পোষ্ট লিখে এই ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলা করার জন্য দুটি হেল্পলাইন নম্বর ঘোষণা করে দিয়েছেন। এই দুটি হেল্পলাইন নম্বর হলো ১০৭৯ এবং ০৩৩-২২১৪৩৫২৬। মমতা জানিয়েছেন, এই দুটি হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করলে সাহায্য পাওয়া যাবে। এছাড়াও ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো শুরু হয়ে গিয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। এছাড়াও জানিয়েছেন, বিপর্যয় মোকাবিলা করার জন্য কুইক রেসপন্স টিম তৈরি করে দিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই বঙ্গোপসাগরের উপরে নিম্নচাপ তৈরি হয়ে গেছে। আর কিছুদিনের মধ্যেই, সম্ভবত বুধবার রাতে অথবা বৃহস্পতিবার সকালে এই ঘূর্ণিঝড় পশ্চিমবঙ্গ এবং উড়িষ্যা উপকূলে আছড়ে পড়বে। সম্ভাবনা রয়েছে দীঘা, সুন্দরবনের মতো এলাকাগুলিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে চলেছে এই সাইক্লোন যশ এর প্রভাবে।