প্রতিদিন গরম জলে স্নান করে এড়ানো যাবে করোনার সংক্রমণ? জেনে নিন কতটা যুক্তিসম্মত
কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে একটি টুইট করে আমাদের জানিয়েছে সম্প্রতি
যেকোনো রোগেই যেমন সবার আগে মাথায় আসে প্যারাসিটামল এর নাম, তেমনি যেকোনো জীবাণু মারার ক্ষেত্রেও সবার আগে আমাদের মাথায় আসে গরম জলের নাম। আর এটা আমাদের কোনো মস্তিষ্ক প্রসূত ব্যাপার না, গরমে অধিকাংশ ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া সত্যিই মারা যায়। আর সেই একই ভাবে, করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে এই ধরনের বেশ কিছু ঘরোয়া টোটকা। কিন্তু এই ধরনের একটি ভয়ানক ভাইরাসে কি আদৌ কাজ করে গরম জল? কেন্দ্রীয় সরকার এবারে জানিয়ে দিয়েছে এই গরম জল এবং করোনা ভাইরাস নিয়ে কিছু কড়ওয়া সচ্।
কেন্দ্রীয় সরকার একটি টুইট করেছে যেখানে সাফ সাফ বলে দেওয়া হয়েছে, গরম জলে করোনা ভাইরাস কোনভাবেই মারা যায় না। ফলে আপনি যদি গরম জলে স্নান করেন অথবা গরম জল পান করেন তাহলে কিন্তু আপনি করোনা প্রতিরোধ করে দেবেন এরকম কিন্তু নয়। করোনা থেকে বাঁচার জন্য নানান সময় এই ধরনের ভুল ভ্রান্তি মানুষে করছে। করোনা আক্রমণ শুরু হবার সঙ্গে সঙ্গে এই ধরনের বেশকিছু মিথ আমাদের মধ্যে চলে এসেছিল।
করোনা আক্রমণ যখন শুরু হয়েছিল তখন আমরা যেকোনো ধরনের স্যানিটাইজার ব্যবহার করে নিয়েছিলাম এই ভেবে যে এগুলি আমাদের করোনা প্রতিরোধ করতে পারে। কিন্তু আদতে নয়। তিন ধরনের স্যানিটাইজার যদি আপনি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে করোনা প্রতিরোধ হবে। আর সে ক্ষেত্রেও অ্যালকোহল এর একটি নির্দিষ্ট মাত্রা থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। এই তিনটি স্যানিটাইজার অবশ্যই ভাবে তৈরি হতে হবে ইথাইল অ্যালকোহল, আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল এবং হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড এর মধ্যে কোন একটি জিনিস দিয়ে। আর অবশ্যই তার মাত্রা হতে হবে ন্যূনতম ৭০ শতাংশ। আর এই ধরনের স্যানিটাইজার কিন্তু কখনোই জেলি লাইক স্যানিটাইজার নয়।
অনেকেই সকালে উঠে লেবু দিয়ে গরম জল তৈরি করে তার মধ্যে একটু ডেটল বা কোন একটি অ্যান্টিসেপটিক লিকুইড ফেলে স্নান করা শুরু করেছিলেন। এটি আপনাকে কোনোভাবেই সুরক্ষা দেবে না। প্রথমত অ্যান্টিসেপটিক লিকুইড দিয়ে করোনা মারা যায় না। দ্বিতীয়ত, করোনার দেহে থাকা স্পাইক প্রোটিন ধ্বংস করতে আপনার ন্যূনতম তাপমাত্রা প্রয়োজন হবে ৬০ থেকে ৭৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কিন্তু এত পরিমান তাপমাত্রার গরম জল দিয়ে মানুষে স্নান করতে পারে না।
তার বদলে আপনারা নিজেদের শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ার বৃদ্ধি করতে কিছু কিছু ঘরোয়া টোটকা ব্যবহার করতে পারেন। আপনারা প্রতিদিন সকালে ১০ গ্রাম বা দুই চামচ করে ভালো চবনপ্রাস খেতে পারেন। যারা ডায়াবেটিস পেশেন্ট আছেন তারা চিনি ছাড়া চবনপ্রাস খেতে পারেন। পাশাপাশি তুলসী, ডালচিনি, আদা শুঠ, গোলমরিচ দিয়ে চা তৈরি করে খেতে পারেন, অথবা এক ধরনের সুরুয়া তৈরি করে খেতে পারেন। তার পাশাপাশি হালকা গরম দুধের আধ চা চামচ হলুদ দিয়ে দুবার পান করতে পারেন, তবে হলুদ দুধ কিন্তু আপনার শরীরের তাপমাত্রা প্রচন্ড পরিমাণে বৃদ্ধি করে দেবে, তাই হয়তো এই গরমকালে এই জিনিসটি না খাওয়াই ভালো। অন্যদিকে আপনি ভিটামিন সি ট্যাবলেট গ্রহণ করতে পারেন এবং বিভিন্ন লেবুজাতীয় ফল, আমলকি খেতে পারেন।