বর্তমানের কর্মব্যস্ত জীবনে মানুষের হাতে সময় খুব কম। এক্ষেত্রে নিজের যত্ন নেওয়া সবসময় সম্ভব হয় না সাধারণের পক্ষে। আর এর মাঝেই ত্বকের হাজারটা সমস্যা নিয়ে চলতে হয় অনেককেই। তার মূল কারণ অনিয়ন্ত্রিত – অনিয়মিত জীবনযাপন ও দূষণ। যার কারণবশত বয়সের আগেই বয়সের ছাপ পড়তে পারে চোখে-মুখে।
মানুষের ত্বক খুবই স্পর্শকাতর। ত্বকের ধরন অনুযায়ী যদি ক্রিম কিংবা ফেসমাস্ক ব্যবহার করা না হয় তাহলে, তার বাজে প্রভাব পড়তে পারে ত্বকে। যার ফলস্বরূপ ত্বকের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। বয়সের আগেই বয়সের ছাপ পড়তে পারে চোখে-মুখে। দেখা দিতে পারে বলিরেখাও। কারণ সেইসমস্ত ব্যবহারযোগ্য জিনিসে বেশিরভাগ সময়েই বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল থাকে যা ত্বকের জন্য খুব একটা ভালো নয়। এই সমস্যার সমাধান খুব সহজেই পাওয়া যেতে পারে বাড়িতে বসেই। ঘরোয়া টোটকাতেই এমন কিছু ফেসমাস্ক তৈরি করা সম্ভব যা, দূর করতে পারে বলিরেখার সমস্যা। পদ্ধতি জানুন।
পদ্ধতি:
১) পাকা কলা: এটি শরীর ও ত্বক দু’ক্ষেত্রেই খুব উপকারী। পাকা কলাতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও মিনারেল উপস্থিত থাকে যা, শরীর ও ত্বকের নানা সমস্যা দূর করে দিতে পারে। একটি পাত্রে যদি একটি প্রমাণ সাইজের পাকা কলা ভালো করে চটকে নেওয়া হয় তাহলে, সেটি ফেসমাস্ক হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব। ত্বকে ফেসমাস্ক হিসেবে এই প্রলেপ ভালো করে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে দেওয়ার পর ভালো করে জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। সপ্তাহে একদিন যদি এই ফেসমাস্ক ব্যবহার করা হয় তাহলে, বলিরেখার সমস্যা দূর হওয়ার পাশাপাশি ফিরবে ত্বকের কোমলতাও।
২) ডিমের সাদা অংশ: কাঁচা ডিম ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা মেটাতে ভীষণভাবে কার্যকরী। কারণ এটি ত্বকে কোলাজানের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। একটি পাত্রে ডিম ফাটিয়ে নিয়ে যদি শুধুমাত্র ডিমের ভিতরের সাদা অংশটা আলাদা করে নিয়ে ত্বকের উপর লাগানো হয় তাহলে, তা বলিলেখার সমস্যা দূর করতে পারে। পাশাপাশি ত্বকের স্বাভাবিক কোমলতা বজায় রাখতেও সহায়তা করে এটি।
৩) গোলাপ ও দুধ: ত্বকের বলিরেখার সমস্যা দূর করতে যদি গোলাপ গুঁড়োর সাথে পরিমাণমতো দুধ মিশিয়ে নেওয়া হয় তাহলে, সেটি নিঃসন্দেহে একটি উপকারী ফেসমাস্ক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি ত্বকে লাগানোর পর ২০ মিনিট মতো রেখে দিয়ে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিলেই প্রভাব চোখে পড়বে। সপ্তাহে এক থেকে দু’বার এই ফেসমাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪) ল্যাভেন্ডার ও ওটস্: ত্বকের বলিরেখার সমস্যা মেটাতে ল্যাভেন্ডার ফুলের গুঁড়ো ও ওটস্ খুবই কার্যকরী। একটি পাত্রে পরিমাণ মতো এই ফুলের গুঁড়ো ও ওটস্ নিয়ে তার সাথে পরিমাণ মতো জল মিশিয়ে নিয়ে মিহি প্রলেপ বানিয়ে নিতে হবে। এরপর সেই প্রলেপ ত্বকে লাগানোর পর ১৫ মিনিট শুকানোর জন্য ছেড়ে দিতে হবে। শুকিয়ে গেলে পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। ধীরে ধীরে প্রভাব চোখে পড়বে নিজেরই।
৫) অলিভ অয়েল: অলিভ অয়েলে শরীরে কোলাজেনর পরিমাণ বৃদ্ধি করে, যা ত্বককে তরুণ রাখতে সহায়তা করে। যদি এই তেল দিয়েই রোজের রান্না করা যায় তাহলে, তা শরীর ও ত্বক দুয়ের জন্যই উপকারী। পাশাপাশি উধাও হবে বলিরেখার সমস্যাও।
৬) আনারস : আনারস ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। এটি ত্বককে বয়সের আগে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। এটি অ্যান্টি-এজিং হওয়ার পাশাপাশি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধও। যদি আনারস দিয়ে ত্বকের ম্যাসেজ করা যায় তাহলে, তা ত্বকের অনেক সমস্যা দূর করে দিতে সহায়তা করে।
৭) ধূমপান বন্ধ: যারা প্রচুর পরিমাণে ধূমপান করেন তাদের ত্বক বয়সের আগেই বুড়িয়ে যায়। কারণ ধূমপান শরীরের পাশাপাশি ত্বকের নানারকম ক্ষতি করে থাকে। ত্বকের আদ্রতা কমিয়ে দেয়, কিছু কিছু ক্ষেত্রে চামড়ায় ভাঁজও পড়ে ধূমপানের কারণে। অতএব, অবিলম্বে ধূমপান বন্ধ করা উচিৎ ত্বকের উপকারিতার স্বার্থে।