সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর শুরুতেই সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ী মহলের জন্য এলো বড় স্বস্তির খবর। তেল বিপণন সংস্থাগুলি ঘোষণা করেছে, এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের দামে উল্লেখযোগ্য কাটছাঁট করা হয়েছে। এর ফলে বিশেষ করে হোটেল, রেস্তরাঁ, ধাবা এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের খরচ অনেকটাই কমবে। গৃহস্থালি ব্যবহারকারীদের জন্যও প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা বড় সহায়ক হিসেবে কাজ করছে।
কমার্শিয়াল সিলিন্ডারে সাশ্রয়
সেপ্টেম্বর মাস থেকে ১৯ কেজির কমার্শিয়াল এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ৫১.৫০ টাকা পর্যন্ত কমানো হয়েছে। দিল্লিতে আগে যেখানে এই সিলিন্ডারের দাম ছিল ১,৬৩১.৫০ টাকা, তা নেমে এসেছে ১,৫৮০ টাকায়। মুম্বই, কলকাতা এবং চেন্নাইতেও মিলেছে একই ধরনের ছাড়। উদাহরণস্বরূপ, মুম্বইতে দাম ১,৫৮২.৫০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ১,৫৩১.৫০ টাকা। এই ছাড় সরাসরি প্রভাব ফেলবে খাবার শিল্পে। হোটেল, ফুড স্টল ও ছোট ব্যবসায়ীরা ব্যাপকভাবে এলপিজির উপর নির্ভরশীল। টানা দুই মাসে কমার্শিয়াল সিলিন্ডারের দাম প্রায় ৮২ টাকা কমেছে, যা তাঁদের জন্য বড় স্বস্তির। ফলে ব্যবসার খরচ যেমন কমবে, তেমনই গ্রাহকরাও উপকৃত হতে পারেন।
গৃহস্থালির ক্ষেত্রে কী পরিস্থিতি
গৃহস্থালির জন্য ব্যবহৃত ১৪.২ কেজির সিলিন্ডারের দামে এখনও কোনও পরিবর্তন হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম এবং ডলার-রুপির মান যদি কমতে থাকে, তাহলে শীঘ্রই গৃহস্থালি সিলিন্ডারও সস্তা হতে পারে বলে আশাবাদী বিশেষজ্ঞরা।
উজ্জ্বলা যোজনা: নারীদের সহায়ক
গৃহস্থালির মহিলা ব্যবহারকারীদের জন্য প্রধান ভরসা রয়ে গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা (PMUY)। এই প্রকল্পের আওতায় দেশজুড়ে কোটি কোটি পরিবার পাচ্ছেন বিনামূল্যে এলপিজি সংযোগ, প্রথম রিফিল এবং চুলা। প্রতি বছর সর্বোচ্চ ৯ বার ১৪.২ কেজির সিলিন্ডারে ৩০০ টাকা করে ভর্তুকি সরাসরি মহিলাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। এতে বছরে প্রায় ২,৭০০ টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় হয়। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের জন্য এই প্রকল্পে ১২,০০০ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ফলে ভর্তুকি সুবিধা অব্যাহত থাকবে।
ভর্তুকি পাওয়ার শর্ত
উজ্জ্বলা যোজনার সুবিধা পেতে হলে পরিবারের নাম BPL তালিকায় থাকতে হবে। পরিবারের মহিলা প্রধানের নামে আধার ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা বাধ্যতামূলক। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলেই মিলবে গ্যাস সংযোগ, সঙ্গে প্রথম রিফিল ও চুলা ফ্রি। পরবর্তী রিফিলে ভর্তুকির টাকা অটোমেটিকভাবে জমা হবে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। যদি টাকা না আসে, তবে নিকটবর্তী গ্যাস এজেন্সি, ব্যাংক বা জনসেবা কেন্দ্রে যোগাযোগ করা যাবে।
সরকারের উদ্যোগ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমার ফলে সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ এলপিজি সিলিন্ডারের দামে মিলেছে বড় ছাড়। কমার্শিয়াল গ্রাহক, ছোট ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে গৃহস্থালির মহিলারা—সবাই কোনও না কোনওভাবে উপকৃত হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রবণতা বজায় থাকলে ভবিষ্যতে গৃহস্থালি সিলিন্ডারের দামেও আরও স্বস্তি মিলতে পারে।














