কাল মাথাভাঙ্গা যাবেন মমতা, ‘শহীদ’ বিজেপি কর্মী আনন্দের পরিবারের সাথে করবেন দেখা
চতুর্থ দফা নির্বাচনের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চারজনের মৃত্যু হয়েছিল এবং দুষ্কৃতীর গুলিতে আনন্দ বর্মন নামক এক যুবকের মৃত্যু হয়েছিল
একুশে বিধানসভা নির্বাচন দামামা বেজে গেছে বাংলা। ইতিমধ্যেই বাংলায় চার দফা নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে এবং বাকি রয়েছে আরও চার দফা নির্বাচন। এরইমাঝে চতুর্থ দফা নির্বাচনে কোচবিহারের শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ জনের মৃত্যু হওয়ায় রীতিমতো সরগরম হয়ে ওঠে বঙ্গ রাজনৈতিক মহল। তারপর থেকে কার্যত তৃণমূলের সাথে নির্বাচন কমিশনের ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে। এরই মাঝে নির্বাচন কমিশন গতকাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ২৪ ঘন্টার জন্য প্রচার করা থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। তাই তার প্রতিবাদে আজ গান্ধী মূর্তি পাদদেশে নিরব ধর্নায় বসেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তারপর তিনি সেখান থেকে বিধাননগরে একটি জনসভায় উপস্থিত হন এবং আগামীকালের কর্মসূচির কথা সবাইকে জানিয়ে দেন।
শীতলকুচি ঘটনার পর নির্বাচন কমিশন কড়া নির্দেশ দিয়েছিল যে আগামী ৭২ ঘন্টা শীতলকুচিতে কোন রাজনৈতিক দলের নেতা প্রবেশ করতে পারবে না। আর নির্দেশ দেওয়ার পরের দিন সকালেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শীতলকুচিতে গিয়ে মৃতদের পরিবারের সাথে দেখা করার কথা ছিল। তবে নির্বাচনী বিধি মেনে চলার কারণে তার আর যাওয়া হয়নি মাথাভাঙ্গায়। তবে আজ রাতেই ৭২ ঘন্টা সম্পন্ন হচ্ছে। তাই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন যে কাল সকাল দশটার মধ্যে তিনি মাথাভাঙ্গায় মৃতদের পরিবারের সাথে দেখা করবেন এবং আহতদের সাথে হাসপাতালে গিয়ে কথা বলবেন। দলের পক্ষ থেকে জানা গেছে, আগামীকাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকালে মাথাভাঙ্গা মহকুমা হাসপাতালে যাবেন। তিনি জনসভায় দাঁড়িয়ে বলেছেন, “শীতলকুচিতে চারজন পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছেন। একজন মারা গিয়েছেন দুষ্কৃতীদের গুলিতে। মাথাভাঙ্গার প্রার্থীকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি কাল সকালেই শীতলকুচি যাব।”
সম্প্রতি বিজেপি বারংবার প্রশ্ন করছে যে চতুর্থ দফা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ জনের মৃত্যুর ছাড়াও ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে আনন্দ বর্মণের। বিজেপি এই আনন্দ বর্মনকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করেছেন। এই ইস্যু তুলে বিজেপি মমতাকে কটাক্ষ করে বলেছে, “চারজন সংখ্যালঘু মারা গেছে বলে আপনি চোখের জল ফেলছেন। তাহলে রাজবংশী আনন্দের জন্য আপনার কেন মন কাঁদছে না?” অবশ্য এই অপরাধের প্রতিবাদ জানিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস জবাব দিয়েছে, আনন্দ ইতিমধ্যেই শহীদ তকমা পেয়েছে। মমতা রাজবংশীদের বন্ধু। এই ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বলেছেন, “শীতলকুচি তে আমি বিজেপি কর্মী পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চাইবো। আমি কখনোই কারণ মধ্যে ভাগাভাগি করি না। আমার দলে লোক মারা গেল আমার যেমন কষ্ট হয় তেমন অন্য দলের লোকের মৃত্যুতে আমার সমান কষ্ট হয়।”