শ্রেয়া চ্যাটার্জি – প্রধানত জ্যৈষ্ঠ মাসের চারটি মঙ্গলবার মঙ্গলচন্ডীর ব্রত পালিত হয়। সাধারণত ব্রাহ্মণরা একটি করে থাকেন। সংসারের কল্যাণে এই ব্রত করা হয়। এই পুজোর প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয় ১৬ বাটা। ১৬ রকমের বস্তু দ্বারা নির্মিত হয়। ‘মঙ্গল’ কথাটির অর্থ হলো ‘শুভ’, ‘চন্ডী’ অর্থ হলো ‘দেবী দুর্গা’। এই ব্রত করার সময় মূলত দেবী দুর্গার পুজো করা হয় পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খন্ড প্রভৃতি জায়গায় মঙ্গল চন্ডীর ব্রত পালন করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার উজানী যা বর্তমানে কো-গ্রাম নামে পরিচিত। সেখানে দেবমন্দিরের পিঠা দেবতা মঙ্গলচন্ডী। এই গ্রুপের মাধ্যমে দুটি জিনিস দেওয়া হয় ‘মঙ্গলথলি’ এবং ‘পুঙ্গি’। লাল শালুতে বাঁধা হরিতকী, আতপ চাল ইত্যাদি নিয়ে তৈরি হয় ‘মঙ্গলথলি’। সংসারের মঙ্গল কামনায় এটি করা হয়।
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে শ্রীমন্ত সদাগরের মঙ্গলচন্ডীর কাহিনী রয়েছে, চলুন জেনে নি কিভাবে এই পুজোর সূচনা হলো-
শ্রীমন্ত সওদাগর তার বাণিজ্যিক জাহাজ নিয়ে যাচ্ছিলেন সিংহলের দিকে। কিন্তু মাঝপথে হঠাৎ উঠল প্রবল ঝড়। তার বাণিজ্যিক জাহাজ সব নিয়ে সমুদ্রের মাঝখানে ডুবে গেল। রাজা কোনো মতে বেঁচে উঠলেন সিংহলের বন্দরে। সিংহল রাজার রক্ষীরা তাঁকে কারারুদ্ধ করেন। কারাগারে থাকা অবস্থার সময় মঙ্গলচন্ডীর তিনি বন্দনা করতেন। দেবীর সুবাদেই তিনি কারারুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে, নিজের গ্রামে ফিরে আসেন। গ্রামে ফিরে তিনি ‘মঙ্গল চন্ডী’ পূজার প্রচলন করেন।