Trending NewsAppleNYT GamesCelebrity NewsWordle tipsBig 12 SoccerCelebrity BreakupsKeith UrbanUnited Nations Day

পুরুলিয়ায় দেবের প্রচারে তরুণীদের উদ্যম নাচ, উন্মাদনা দেখে আপ্লুত অভিনেতা

Updated :  Monday, March 22, 2021 7:40 PM

টলিউডে এই মুহূর্তে রীতিমত ভাঙন শুরু হয়েছে। একের পর এক অভিনেতা-অভিনেত্রী ও কলাকূশলীরা যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে। ফেব্রুয়ারি মাসে যশ দাশগুপ্ত (yash Dasgupta) বিজেপিতে যোগদানের পর যশকে সৌজন্যবোধ জানিয়ে রাজনৈতিক ময়দানে অভ‍্যর্থনা করেছিলেন দেব( Dev)। ফলে তখন থেকেই শুরু হয়েছিল জল্পনা, দেবও বোধহয় এবার বিজেপিতে যোগদান করবেন। কারণ বহুদিন আগে দেব তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছিলেন, তাঁকে জোর করে রাজনীতিতে নিয়ে এসেছেন মমতা। সুতরাং দেবের তৃণমূল ছাড়ার জল্পনা আরও জোরদার হয়েছিল।

কিন্তু এবার সব জল্পনায় জল ঢেলে দেব জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে তাঁর তৃণমূল ছাড়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। তিনি জানিয়েছেন, তিনি কট্টর রাজনীতিবিদ নন এবং মন্ত্রীত্ব পাওয়ার স্বপ্ন তিনি দেখেন না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) তাঁর জন্য যা করেছেন, তাতেই তিনি খুশি।

দেব বরাবর সৌজন্যমূলক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। এই মুহূর্তে তাঁর সৌজন্যবোধ তৃণমূলের তুরুপের তাস। যশ বা শ্রাবন্তী (srabanti chatterjee)-র মতো তাঁকে নিয়ে কোনও কেচ্ছা নেই। এমনকি দেব টলিউডের একাধিক টেকনিশিয়ানকে আর্থিক ভাবে সাহায্য করেছেন। টলিউডের বৃদ্ধ টেকনিশিয়ানরা কর্মহীন হয়ে দেবের কাছে গেলে দেব তাঁদের পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছেন। দেবের পরিষ্কার ভাবমূর্তি এবং সৌজন্যবোধের প্রশংসা বিরোধীদের মুখেও শুনতে পাওয়া গেছে। ফলে বাংলার আসন দখল করার জন্য বিজেপি দেবকে চাইলেও দেবের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গেছে, দেব গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে বিজেপিতে যেতে রাজি নন। তিনি তৃণমূলেই থাকছেন। ভবিষ্যতে যদি দেবের তৃণমূল ছাড়ার পরিস্থিতি তৈরী হয় তাহলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে সম্পূর্ণভাবে তাঁর প্রোডাকশন হাউস ও ফিল্ম কেরিয়ারে মনোনিবেশ করবেন।

এই মুহূর্তে দেব ভোটের প্রচারে ব্যস্ত। কিছুদিন আগে, চন্দ্রকোণায় দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে এসেছিলেন দেব। প্রচারের ফাঁকেই দেব ঘন্টা দুয়েকের জন্য গিয়েছিলেন চন্দ্রকোণা রোডে নিজের মামাবাড়িতে। দীর্ঘ আট বছর পরে দেবকে কাছে পেয়ে রীতিমত আনন্দের ঢেউ বয়ে গেল মামার বাড়িতে। দেবের বড়মামা নারায়ণ মুখোপাধ্যায় (Narayan Mukherjee) স্থানীয় স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। দেব আগের রাতেই মামাকে ফোন করে তাঁর আসার খবর জানিয়ে দিয়েছিলেন। সেই মতো নারায়ণবাবু নিজে বাজার করে আয়োজন করেছিলেন। দেবের মামীমা মিতা দেবী (Mita Mukherjee) নিজের হাতে রান্না করেছিলেন ভাগ্নের জন্য। মিতা দেবী জানিয়েছেন তাঁর বিয়ের সময় দেব ছিলেন পাঁচ বছরের বালক। ছোটবেলায় দেবের পছন্দ ছিল মামীমার রান্না করা চিকেন এবং রুটি। এদিন কপ্টার থেকে নেমেই আগে মামাবাড়িতে গিয়েছিলেন দেব। মামাবাড়ি গিয়েই পাঁচ মামা-মামীকে প্রণাম করেছেন দেব। অপরদিকে মামাতো ভাই-বোনেরা তাদের দাদার সঙ্গে সেলফি তুলেছেন। মিতা দেবী যত্ন করে ভাগ্নেকে নিজের কাছে বসিয়ে খাইয়েছেন। এদিন দেবের খাওয়ার মেনুতে ছিল সাদা ভাত ও রুটি দুই-ই ছিল। এছাড়াও ছিল সোনামুগের ডাল, শাক ভাজা, আলুভাজা, উচ্ছে ভাজা, বেগুন ভাজা, পটল ভাজা, পোস্তর বড়া, নবরত্ন, মাটন, চিকেন, দই, মিষ্টি, ফ্রুট চাটনি। ডায়েট ভুলে দেবও খেলেন পেটপুরে। দুই ঘন্টা ধরে খাওয়া দাওয়া, গল্পগুজবের শেষে এল দেবের ফেরার পালা। আদরের ভাগ্নেকে বিদায় দেওয়ার সময় নারায়ণবাবু বললেন, “ভাগ্যিস ভোটটা ছিল, তাই তো ভাগ্নের দেখা পেলাম”।

সম্প্রতি পুরুলিয়ায় প্রচারে গিয়েছিলেন দেব। হেলিকপ্টার থেকে দেব নামতেই তাঁকে স্বাগত জানালেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন হাজারি বাউরি (Hajari bauri)। অপরদিকে বাঘমুন্ডিতে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন সুশান্ত মাহাতো (sushant mahato), পুরুলিয়ার অপর আরেকটি কেন্দ্র পাড়া থেকে প্রার্থী হয়েছেন উমাপদ বাউরি (Umapada bauri)। ফলে রীতিমত পুরুলিয়ার বিভিন্ন স্থান ঘুরে এই তিন প্রার্থীর জন্য প্রচার করেছেন দেব। নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর প্রচারের ছবি শেয়ার করেছেন দেব। দেবের প্রচার উপলক্ষ্যে পাড়া, বাঘমুন্ডি ও রঘুনাথপুরের রাস্তা কমলা, সাদা ও সবুজ রঙের বেলুনে ছেয়ে গিয়েছিল। তপ্ত রাস্তায় ‘খেলা হবে গানের সঙ্গে নেচে দেবকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন স্থানীয় তরুণীরা। হুডখোলা জিপে প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়ে গরম উপেক্ষা করে প্রচার করলেন দেব এবং পুরুলিয়াবাসীকে অভিবাদন জানালেন। পুরুলিয়ায় এদিন একাধিক রোড শো ও পথসভা করেছেন দেব। এর মধ্যেই একটি সভায় দেব বলেছেন তিনি যখন প্রথম রাজনীতিতে এসেছিলেন তখন সবাই ভেবেছিলেন দেবের ফিল্ম কেরিয়ার শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু দেব চেষ্টা করেছেন মানুষের জন্য ভালো কাজ করার।