আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে বঙ্গ বিজেপির সাংগঠনিক রদবদলের চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। সেই দিকে নজর রেখে মঙ্গলবার বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব দিল্লির কনস্টিটিউশন হলে বৈঠকে বসতে চলেছেন। এই বৈঠকে রাজ্য সাংগঠনিক এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হবে। আরএসএস-এর নেতারা সেখানে উপস্থিত থাকবেন। আর এই বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে সরগরম হয়ে রয়েছে রাজ্য রাজনীতি।
সকালে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিজেপি সাংসদদের বৈঠক করার কথা ছিল কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সময় দিতে না পারার কারণে সেই বৈঠক করা সম্ভব হয়নি। তাদের পরিবর্তে শিক্ষা মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান ওই সাংসদদের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং আরো অনেকে দিল্লির সাংসদদের সঙ্গে কথা বললেন। এদিন সন্ধ্যায় আবার দিল্লির কনস্টিটিউশন হলে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বাংলার সব সাংসদেরা। তার সাথে উপস্থিত থাকবেন বঙ্গ বিজেপির পর্যবেক্ষক শিব প্রকাশ।
কিন্তু সব থেকে বড় চিন্তার বিষয় টা হল, এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন আরএসএস-এর নেতারা জানিয়ে সাংসদদের মধ্যে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। একুশের নির্বাচনে ভরাডুবির পরে বিজেপির ওপর কি তাহলে কিছুটা হলেও ক্ষুব্ধ হয়েছে আরএসএস? রাজনৈতিক মহলের ধারণা বিজেপির কর্মকৌশল এবং রাজনৈতিক পরিভাষা নিয়ে কিছুটা সমস্যার মধ্যে রয়েছ আরএসএস। তার মধ্যেই আবার বিধানসভা ভোটের পর থেকেই অন্তর্দ্বন্দ্বে ভুগতে শুরু করেছে বঙ্গ বিজেপি। মুকুল রায় মতো নেতারা দল ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন। আরো অনেক নেতাই তৃণমূলে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন। সুনীল মণ্ডল থেকে শুরু করে আরো অনেকে বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করার চেষ্টা করছেন। ডাউন লেভেলের অনেক কর্মী বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে চলে গিয়েছেন।
অন্যদিকে আবার চার জন মন্ত্রী হয়েছেন বাংলার সাংসদদের মধ্যে। তাদের কাঁধে সংগঠনের দায়িত্ব থাকলেও পাশাপাশি তাদের মন্ত্রিত্ব সামলাতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেস চালু করে দিয়েছে তাদের নতুন পরিকল্পনা এক ব্যক্তি এক পদ। তাহলে কি এবারে আরএসএস তৃণমূলের পথ অনুসরণ করতে পারে? সূত্রের খবর চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বিজেপির সাংগঠনিক রদবদল হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের জন্য।
বিজেপির মধ্যেই কোণঠাসা হয়ে পড়ার জন্য বাবুল সুপ্রিয় কিছুদিন আগে ফেসবুকে নিজের পদত্যাগের কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও তিনি এখনো পর্যন্ত নিজের সিদ্ধান্ত বদল করে সাংসদ পদে রয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের ধারণা বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে আরএসএস এবং বিজেপি। তার পাশাপাশি বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ভবিষ্যৎ নিয়েও কিন্তু ভাবনাচিন্তা শুরু করতে হবে বিজেপিকে। সবকিছু নিয়েই বর্তমানে বেশ চাপে রয়েছে বাংলায় বিজেপি কমিটি।