পোস্ট অফিস গ্রাহকদের জন্য বড় খবর, কর্মচারীরা গায়েব করলেন ৯৫.৬২ কোটি টাকা, এবার সরকার করবে টাকা উসুল
পোস্ট অফিসের এই সমস্ত যোজনাকে অত্যন্ত সুরক্ষিত মানা হয়, কিন্তু সেখানেই এরকম জালিয়াতির ঘটনা সামনে এসেছে
যদি আপনি পোস্ট অফিসের গ্রাহক হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য রয়েছে একটি জরুরী খবর। কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অর্থাৎ ক্যাগ সম্প্রীতি জারি করে দিয়েছে একটি আশ্চর্যজনক রিপোর্ট যেখানে জানা যাচ্ছে, পোস্ট অফিসের কর্মচারীরা নভেম্বর ২০০২ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২১ পর্যন্ত ৯৫.৬২ কোটি টাকা পাবলিক ফান্ডের দুর্ব্যবহার করেছেন। ডাকঘরের এই সমস্ত যোজনাতে যারা নিবেশ করে থাকেন তাদের জন্য হতে চলেছে এটা অত্যন্ত বড় খবর। এখনো পর্যন্ত পোস্ট অফিসের সমস্ত যোজনাকে অত্যন্ত সুরক্ষিত মনে করা হয়। তার মধ্যে এরকম একটি ঘটনা গ্রাহকদের মনে একটা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আপনাদের জানিয়ে রাখি, যারা সাধারণত নিজের টাকা নিয়ে খুব একটা রিস্ক গ্রহণ করতে চান না তারাই কিন্তু পোস্ট অফিসের এই সমস্ত স্কিম গ্রহণ করে থাকেন এবং পোস্ট অফিসের বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করেন। আপনাদের জানিয়ে রাখি পোস্ট অফিস ভারতের সবথেকে পুরনো এবং সব থেকে বড় ব্যাংকিং সিস্টেম। বহু মানুষ এই পোস্ট অফিসের সিস্টেমে সেভিংস ব্যাংক থেকে শুরু করে রেকরিং ডিপোজিট, টাইম ডিপোজিট, ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট, কিষান বিকাশ পত্র, পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড, মান্থলি ইনকাম সেভিং স্কিম, সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা, এবং বরিষ্ঠ নাগরিক বচত যোজনার মত যোজনায় নিবেশ করে থাকেন। এই সমস্ত যোজনার মাধ্যমে শহর এবং গ্রামীণ এলাকায় মানুষজন তাদের প্রয়োজন পূরণ করে থাকেন। ডাক বিভাগের তরফ থেকে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে আরো কিছু নতুন সেবা প্রদান করছে এই মুহূর্তে ভারত সরকারের অর্থ দপ্তর। কিন্তু সেখানেই এসেছে গলদ।
হিন্দুস্থান পত্রিকায় ছাপানো আজকের খবর থেকে জানা যাচ্ছে, সংসদে আজ অর্থ এবং সঞ্চার মন্ত্রকের সমস্ত কাজকর্মের একটি খতিয়ান এবং অডিট রিপোর্ট জারি করেছিল ক্যাগ। সেখানে উঠে এসেছে এই অস্বাভাবিক সম্পদের দুর্ব্যবহারের কথা। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ‘পাঁচটি সার্কেলে ডাক বিভাগের কর্মচারীরা ভুয়ো একাউন্টে ৬২.০৫ কোটি টাকা জাল ট্রানজাকশন করেছেন। এই অ্যাকাউন্টগুলিকে এই ভুয়ো ব্যালেন্সের সাথে একটিভ দেখানো হয়েছে এবং তারপর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এইভাবে সাধারণ মানুষের টাকা নিয়ে নয় ছয় করেছে ডাক বিভাগের কর্মচারীরা। অন্যদিকে আটটি সার্কেলে গ্রাহকদের পাসবুকে ৯.১৬ কোটি টাকা নগদ জমার রেকর্ড দেখানো হয়েছে তবে ডাকঘরের খাতায় এই সমস্ত রেকর্ড ওঠেনি। পরবর্তীতে ডাক কর্মীরা এই টাকা ফেরত নিয়ে নিয়েছেন।’
রিপোর্টে আরো জানানো হয়েছে, ‘চারটি সার্কেলে ডাক কর্মচারীরা ভুয়ো সই অথবা আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে গ্রাহকদের খাতায় ৪.০৮ কোটি টাকার জালিয়াতি করেছেন। অন্যান্য টাকা কর্মচারীরা ভুয়ো ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে আনঅথরাইজড লেনদেনের মাধ্যমে টাকা সরিয়ে নিয়েছেন। চারটি সার্কেলে তিন কোটি টাকার জালিয়াতি হয়েছে। এছাড়াও দুটি সার্কেলে জালিয়াতি করতে বিভিন্ন জালিয়াত চক্রেরও ব্যবহার করেছে ডাকঘর গুলি। সেখানে সকলে একসাথে মিলে ১.৩৫ কোটি টাকার জাল একাউন্ট খুলেছে এবং তারপর সেখান থেকে টাকা ফেরত নিয়ে নিয়েছে।’