কোন্নগর সেজে উঠেছে ৩০০ বছরেরও বেশী প্রাচীন মা রাজ রাজেশ্বরী পুজোয়, উদ্বোধন হল আজ
শ্রেয়া চ্যাটার্জি : গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত কোন্নগর একটি ঐতিহ্য সম্পন্ন জায়গা। কলকাতা থেকে কিছুটা দূরে হলেও এখন আর এই স্থানটিকে মফস্বল বলা বোধ হয় উচিত হবে না। প্রাসাদোপম বাড়ি, ফ্ল্যাট বাড়িতে ভরে গেছে জায়গাটি। তবে কিছু কিছু পাড়াতে থেকে গেছে এখনো ঐতিহ্য, বনেদিয়ানার ছোঁয়া। যেখানে ফ্ল্যাটের পাশে এখনো দেখা যায় বাড়ির সামনে লাল রক, কড়ি বরগার ঘর, বড় বড় কাঠের সদর দরজা। এমনই এক বনেদি পাড়ার মধ্যে অবস্থিত রাজরাজেশ্বরী মন্দির।
এখানে মা ষোড়শী রূপে পূজিতা হন। ৩০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন এই পুজো কোন্নগরের ঐতিহ্য বহন করছে। এই ঠাকুরের স্বপ্নাদেশে জগৎগুরু শঙ্করাচার্য কোন্নগরে জি টি রোড এর কাছে একটি রাজরাজেশ্বরী মঠ স্থাপন করেন। মঠের মূর্তিটি অবশ্য অন্যরকম। মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। দুদিন ধরে পুজো চলে , পরেরদিন মায়ের বিসর্জন। পুজোর আগের দিন উদ্বোধন। তার সাথে থাকে নানান রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মন্দির সংলগ্ন মাঠেতে মেলা বসে, যা সাত দিন ধরে চলে। মা রাজরাজেশ্বরী এখানে তন্ত্র মতে পূজিতা হন, তবে বলিদান হয় না। কুমারী পুজো হয় এবং চার বছর অন্তর অন্নকূট অনুষ্ঠিত হয়। শিবের নাভি থেকে উৎপন্ন পদ্মের ওপরে দেবী অধিষ্ঠিতা, দেবীর পায়ের কাছে আছেন ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর এবং ইন্দ্র, দুই পাশে আছেন জয়া, বিজয়া এবং আরো দুই সখী। পুজোর দ্বিতীয় দিনে হয় নরনারায়ন সেবা। এখানকার সদস্যরা খুব যত্ন নিয়ে মায়ের পুজোর ব্যবস্থা করেন এবং সাধারন মানুষদের যাতে পুজো দিতে কোনভাবে অসুবিধা না হয়, সেদিকেও তারা লক্ষ্য রাখেন। তাছাড়া মেলাপ্রাঙ্গণে টুকিটাকি কেনাকাটা করতে আসা মানুষদের ও যাতে কোনো রকম অসুবিধা না হয় সে বিষয়েও তারা সদা সতর্ক থাকেন। শুধু কোন্নগর বাসী নয়, দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এখানে আসেন মায়ের প্রসাদ গ্রহণ এর জন্য। মায়ের প্রতিমা শিল্পীরা বংশপরম্পরায় এই মায়ের প্রতিমা তৈরি করে চলেছেন।
আরও পড়ুন : নিজের গর্ভাবস্থার প্রথম ছবি শেয়ার করলেন কোয়েল মল্লিক, দেখুন সেই ছবি
সারাবছর মন্দিরের মধ্যে মায়ের মূর্তি না থাকলেও বেদিটি পূজিত হন। প্রতি পূর্ণিমাতে এখানে সত্যনারায়ণের সিন্নি প্রদান করা হয়। রাজরাজেশ্বরী মন্দির সংলগ্ন রয়েছে দুর্গা মায়ের মন্দির। সাবেকি মতে, দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে এখানে দুর্গাপূজাও হয়। মন্দির সংলগ্ন মাঠেতে সারাবছরই ভলিবল প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এছাড়াও এখানে অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়।