শ্রেয়া চ্যাটার্জি – করোনা ভাইরাসে বিধ্বস্ত গোটা পৃথিবী, আমাদের ভারতবর্ষেও আক্রান্ত কিছু কম নয়, তাই প্রধানমন্ত্রীর সরকারি তহবিলের সকলেই তাদের সাধ্য মতো টাকা জমা দিচ্ছেন। সেলিব্রেটি থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। যে যেমনটা পারছেন তেমনটাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এই যুদ্ধক্ষেত্রে মোকাবিলা করার জন্য সামিল হয়েছে ক্ষুদেরাও। বাবা, মার দেওয়া টাকা অথবা পকেটমানি বাঁচিয়ে ভাঁড়ে ফেলা কিংবা জন্মদিনে পাওয়া কোন একটা টাকা ভাঁড়ে ফেলেছিল হয়তো কোন শখের জিনিস কিনবে বলে। কিন্তু এই শখের জিনিস না কিনে, তারা তাদের জমানো অর্থ দান করেছে সাধারণের জন্য।
১৪ বছর বয়সী রক্ষিতা শর্মা, এক বছর ধরে জমানো টাকা দান করেছেন প্রধানমন্ত্রীর ফান্ডে। এই ছোট্ট মেয়েটি দুবার ভাবেনি তার শখের ভাঁড় টি ভাঙতে। তবে সে কিন্তু কোন পকেটমানি পেত না বলেই জানিয়েছে। স্কুল যাতায়াতের জন্য যে টাকা তার মা-বাবা তাকে দিত সেই রিক্সাভাড়া বাঁচিয়ে হেঁটে হেঁটে সে এতদিন ধরে টাকা জমিয়েছে। তার মনে হয়েছে তার এই টাকা দিয়ে যেন মানুষের জীবন বাঁচে।
১১ বছরের রেভেদা ভাট, তার সমস্ত জমানো টাকাও দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে। সেও গত দু’বছর ধরে খেলনা কেনার জন্য একটু একটু করে টাকা জমাচ্ছিল। তবে সেও এই ভাঁড় ভেঙে টাকাগুলি দেওয়ার আগে দুবার ভাবেনি, কারণ তার কাছে মনে হয়েছে খেলনা কেনার থেকে জীবন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ, এবং টাকাটি দেওয়ার পরে সে এমন কথাও অনুরোধ করে বলেছে, তার দেওয়া টাকা থেকে যেন গরিব মানুষদের খাবার জামাকাপড় এবং ঔষধ দেওয়া হয়।
দেরাদুনের অভিনব শর্মা ১৫ বছরের একটি ছোট্ট ছেলে সেও তার জমানো টাকা দিয়েছে সাধারণ মানুষের কাজে লাগার জন্য। এই ছোট্ট ছেলেটি বলেছে, ভগবানের কাছে তো সব আছে, তার অর্থের দরকার নেই, অর্থের দরকার গরীব মানুষগুলোর। তাদের জামাকাপড়, খাবার এবং ওষুধের দরকার। মানুষের সেবা করাই ভগবানের সেবা করা এমনটাই সে বিশ্বাস করে।
অসাধারণ এই ক্ষুদেরা, এতোটুকু বয়সেও তারা সত্যকে এমন ভাবে উপলব্ধি করেছে যে সত্যিই তাদের এই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাতে হয়। শুধু তারা নয় তাদের মা-বাবাকেও এই কাজে সমর্থন করার জন্য এবং এগিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ না জানালেই নয়।