এবার ভারতে ছাড়পত্র পেল ‘স্পুটনিক ভি’, আরও বেশি সুবিধা পাবে দেশ
নয়াদিল্লি: ভারতে (India) ইতিমধ্যে করোনার ভ্যাকসিন (Corona Vaccine) হিসাবে ছাড়পত্র পেয়েছে অক্সফোর্ডের (Oxford) কোভিশিল্ড (Covishield) এবং ভারত বায়োটেকের (BioTech) কোভ্যাকসিন (Covaxin)। টীকা প্রদানের কাজ ও এগোচ্ছে দ্রুত গতিতে। এবার ভারতে তৃতীয় টিকা হিসাবে ভারতে ছাড়পত্র পাওয়ার পথে রাশিয়ার (Russia) তৈরি ‘স্পুটনিক ভি’ (Sputnik V)। হায়দরাবাদের (Hydrabad) ডক্টর রেড্ডিজ ল্যাবরেটরির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে ভারতে ‘স্পুটনিক ভি’-র পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চালাচ্ছে রাশিয়া। কলকাতায় (Kolkata) বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালেও প্রতিষেধকটি নিয়ে পরীক্ষা চলছিল। প্রথম দু’টি ধাপে ইতিমধ্যেই প্রতিষেধকটি উতরে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আপাতত ‘স্পুটনিক ভি’ কে নিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে। ট্রায়াল সফলভাবে সম্পন্ন হলেই ভারতের বাজারে করোনা প্রতিষেধক হিসাবে কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাকসিনের পাশাপাশি আত্মপ্রকাশ ঘটবে ‘স্পুটনিক ভি’র।
মস্কোর গামালিয়া ন্যাশনাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি ‘স্পুটনিক ভি’ প্রতিষেধকটি তৈরি করেছে। গত বছর ১১ অগস্টে সেটি নথিভুক্ত করিয়ে নেয় রাশিয়া, যার ফলে কোভিড প্রতিরোধী প্রতিষেধক প্রস্তুতকারী প্রথম দেশ হিসেবে উঠে আসে তারা। তবে প্রতিষেধকটির গুণাগুণ এবং কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করতে শুরু করেন বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।তবে সম্প্রতি ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’ সম্প্রতি জানিয়েছে, কোভিডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে ‘স্পুটনিক-ভি’-র কার্যকারিতা ৯১.৬ শতাংশ। ওই জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র অনুযায়ী, ‘স্পুটনিক-ভি’-র তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ২০ হাজারের বেশি অংশগ্রহণকারীর দেহে পরীক্ষার পর এই ফলাফল পাওয়া গিয়েছে।
করোনার বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদানে অন্য টিকার তুলনায় ‘স্পুটনিক-ভি’ বেশি কার্যকর বলে দাবি করেছেন রুশ গবেষকরাও। তাঁরা জানিয়েছেন, মানবদেহের দু’টি ভিন্ন অ্যাডেনোভাইরাল ভেক্টরের সাহায্যে করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম এটি। এছাড়াও জরুরি ভিত্তিতে মানবদেহে প্রতিষেধকটি প্রয়োগের অনুমতি চেয়ে ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া-র কাছে আর্জি জানিয়েছে ডক্টর রেড্ডিজ ল্যাবরেটরি। ভারতীয়দের পক্ষে ওই প্রতিষেধক আদৌ নিরাপদ কি না, কী কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, রবিবারের মধ্যে সেই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জমা দিয়ে দেবে তারা। তার কয়েক দিনের মধ্যেই ছাড়পত্র মিলে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এত দিন যদিও আমেরিকান সংস্থা ‘ফাইজার’ আইএনসি-র তৈরি প্রতিষেধকটিই আগে হাতে এসে যাবে বলে মনে করা হচ্ছিল। সেই মতো ডিসেম্বরেই ছাড়পত্রের জন্য আবেদন জানিয়ে রেখেছিলেন ফাইজার কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ভারতে পরীক্ষামূলক নিরীক্ষা চালানোর সিদ্ধান্তই রাশিয়াকে তাদের থেকে এগিয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন প্রতিষেধক বিশেষজ্ঞরা।