চলতি বছরের বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই মমতা সরকার একাধিক জনমুখী প্রকল্পের সূচনা করেছিল। এবারের নির্বাচনে ঘাসফুল শিবিরের জয়ের অন্যতম কান্ডারী ছিল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থেকে শুরু করে লক্ষ্মী ভান্ডার যোজনা। গোটা রাজ্যের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতির কথা মাথায় রেখেই এমন প্রকল্প চালু করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বর্তমানে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা হোক কিংবা ১০০ দিনের কাজের দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় রাজ্যের শাসকদল। তাই ভাবমূর্তি রক্ষার্থে ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী জেলায় জেলায় কড়া বার্তা দিয়েছেন যাতে শুধুমাত্র যোগ্যরায় সমস্ত যোজনার সুবিধা পান।
জনমুখী প্রকল্পের অংশ হিসেবে মমতা সরকারের বাড়ির মা কাকিমাদের জন্য সবচেয়ে বড় অবদান লক্ষী ভান্ডার যোজনা। তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর থেকেই গোটা রাজ্যের মহিলাদের বিশেষ করে ঘরের গৃহিণীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য মমতা সরকার লক্ষী ভান্ডারের সূচনা করেছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী রাজ্য সরকার দ্বারা চালু হওয়া লক্ষী ভান্ডার প্রকল্পে চলছে সীমাহীন দুর্নীতি। তাই রাজ্য সরকারের গৃহিণীদের টাকা দেওয়ার বিষয়ে কড়া অবস্থান নিতে চলেছে। আর তার জন্যই আগামী মাস থেকে লক্ষী ভান্ডারের টাকা থেকে বঞ্চিত হতে পারে অনেকেই।
আপনি কি পাবেন পরের মাস থেকে লক্ষ্মী ভান্ডারের টাকা? পুরোপুরি বন্ধ হবে কি এই প্রকল্প? এই সমস্ত প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলার প্রত্যেকটি গৃহিনীদের মধ্যে। তবে সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী লক্ষী ভান্ডার প্রকল্প বন্ধ হওয়ার কোনো প্রশ্নই হয় না। শুধুমাত্র যারা জাল শংসাপত্র দেখিয়ে বয়স বাড়িয়ে সরকারি আর্থিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে, তারা এবার মহা বিপদে পড়তে চলেছে। এবার থেকে সঠিক কাগজপত্র না দেখালে মহিলারা আর লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা পাবে না। এছাড়া যারা রাজ্য সরকারের অন্যান্য আর্থিক ভাতার সুবিধা ইতিমধ্যেই পাচ্ছেন, তারাও এই লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা পাবেন না।
এছাড়াও অনেকেই রয়েছে যারা নির্দিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না দেখে সমবেতভাবে একটি একাউন্ট দেখিয়ে লক্ষীর ভান্ডারের টাকা তুলছেন। এরপর তাদেরও নিজের নামে ব্যাংক একাউন্ট খুলে লক্ষীর ভান্ডারের টাকা নিতে হবে। ব্যাংকে ওই মহিলার নামে কেওয়াইসি আপডেট করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এবার সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত বা পুরসভা ওই মহিলা বা গৃহিনির যাবতীয় নথিপত্র খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করে তারপরই লক্ষ্মীর ভান্ডারের আর্থিক সুবিধা দেবে।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পে সাধারণ এবং ওবিসি ক্যাটাগরির মহিলাদের জন্য বরাদ্দ মাসিক ৫০০ টাকা। অন্যদিকে তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের ক্ষেত্রে রয়েছে মাসিক ১০০০ টাকা।