শহর থেকে গ্রাম—প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই এখন বসানো হয়েছে স্মার্ট ইলেকট্রিক মিটার। প্রযুক্তির সুবিধায় এই মিটারগুলির মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহে স্বচ্ছতা বাড়ানোর দাবি করা হলেও, এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে এক অজানা চমক। বিশেষজ্ঞদের মতে, মিটারে থাকা একটি ছোট্ট লাল আলো থেকেই বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাগুলি প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা বাড়তি আয় করছে।
লাল আলো কেন জ্বলে?
স্মার্ট মিটার ইনস্টলেশনের পর থেকেই অনেকের নজরে এসেছে এই ছোট্ট লাল আলো। দিনের বেলায় তা স্পষ্ট বোঝা না গেলেও রাতে স্পষ্ট দেখা যায় মিটারের মধ্যে আলো জ্বলছে। বিদ্যুৎ সংস্থার দাবি, এই আলো জ্বলার মানে মিটার সঠিকভাবে কাজ করছে। আলো নিভে গেলে বুঝতে হবে মিটারে ত্রুটি হয়েছে। অর্থাৎ, এটি মূলত ‘ইন্ডিকেটর লাইট’।
অতিরিক্ত খরচ কোথায়?
এখানেই রয়েছে আসল প্রশ্ন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই ছোট্ট আলোটি জ্বলে থাকার জন্যও আলাদা বিদ্যুৎ খরচ হয়। মাসিক গড় হিসেবে প্রায় ১ ইউনিট বিদ্যুৎ লাগে কেবলমাত্র এই লাইটের জন্য। ভারতের বর্তমান গড় দরে এর মূল্য প্রায় ৮ টাকা। একজন গ্রাহকের ক্ষেত্রে হয়তো খরচ বড় কিছু নয়, কিন্তু বহু সংখ্যক গ্রাহকের কাছ থেকে যদি এই বাড়তি টাকা নেওয়া হয়, তাহলে অঙ্ক দাঁড়ায় কয়েক কোটি টাকায়।
কোটি কোটি টাকার বাড়তি আয়
একটি বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থার আওতায় থাকে কয়েক লক্ষ থেকে কয়েক কোটি গ্রাহক। প্রতিটি মিটার থেকেই যদি মাসে ৮ টাকা করে বাড়তি আদায় হয়, তাহলে প্রতি মাসেই সংস্থার বাড়তি আয় দাঁড়ায় কয়েক কোটি টাকায়। অথচ এই খরচে গ্রাহকের সরাসরি কোনও ব্যবহার নেই।
গ্রাহকের অসহায়তা
এই খরচ গ্রাহক স্বেচ্ছায় করছেন না। তবুও তাঁকে দিতে হচ্ছে, কারণ মিটার চালু রাখার জন্য ওই আলো জ্বলতেই হবে। অর্থাৎ গ্রাহকের কোনও কাজেই না এলেও, তাঁকে বাধ্য হয়ে এই বিদ্যুতের বিল মেটাতে হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদ ও বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞদের মতে, এই খরচ অতি সামান্য হলেও বৃহত্তর অঙ্কে তা বিশাল অঙ্কের রাজস্বে পরিণত হচ্ছে। তাঁদের মতে, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির উচিত এ বিষয়ে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা দেওয়া এবং প্রয়োজনে গ্রাহকের স্বার্থে নীতি পরিবর্তন করা।














